সকাল ৭:৫২ । মঙ্গলবার । ২২শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ । ৭ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি বার্তা
  5. খেলাধুলা
  6. খোলা কলাম
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. পর্যটন
  12. ফিচার
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মতামত

বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে তিস্তার পানি 

pp
অক্টোবর ৬, ২০২৫ ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

Spread the love

পিপি ডেস্ক: তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী উপচে সেই পানি হু হু করে ঢুকছে নিম্নাঞ্চলগুলোতে। এতে নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুরের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে দেখা দিয়েছে বন্যার আশঙ্কা। নদীর পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় তীরবর্তী এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন।

রোববার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ মিটার, যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর। রাত ১২টায় পানিপ্রবাহ বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ দশমিক ৫০ মিটারে যা বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটারের ওপরে।

রাতের মধ্যেই তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে উঠার আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরই মধ্যে নদী এলাকায় সতর্কতা জারি করে মাইকিং করা হয়েছে। সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে রংপুরের গংগাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলসহ নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সন্ধ্যার পর থেকে তিস্তার পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন সেখানকার মানুষ। স্থানীয় প্রশাসন সন্ধ্যা থেকে এলাকায় মাইকিং করেছে। সেই সঙ্গে সতর্কতা অবলম্বনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন নির্দেশনাও জারি করা হয়েছে। তিস্তা তীরবর্তী অনেকে মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন বিদ্যালয় ও আশ্রয়কেন্দ্রে।

স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেল থেকে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে তিস্তার পানি। সন্ধ্যার পর থেকে তা আরও বাড়তে শুরু করে। পানি বেড়ে অনেক রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ফলে যেকোনো সময় তিস্তা তীরবর্তী এলাকার রাস্তা ভেঙে শহরে পানি ঢুকে যেতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে ৬ অক্টোবর সকাল ৯টার মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে ও উজানে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম (৪৫) বলেন, বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরে চুলা জ্বলছে না। শিশুদের খাবার নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। সরকার ও প্রশাসনের সহায়তা এখন সবচেয়ে বেশি দরকার।

গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, তিস্তা ব্যারেজের একেবারে পাশে হওয়ায় আমার ইউনিয়নের ওপর সবচেয়ে বেশি চাপ পড়েছে। এখন প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছে। শুকনা খাবার ও ত্রাণ সহায়তা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। তীরবর্তী এলাকাগুলোর মানুষকে অগ্রিম জানানো হয়েছে যেন তারা প্রস্তুত থাকে। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শায়খুল আরিফিন বলেন, বর্তমানে তিস্তা তীরবর্তী অঞ্চলে রোপা আমন, চিনা বাদাম ও শাকসবজির চাষ হচ্ছে। পানি যদি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, তাহলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। তবে এক থেকে দুই দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না। আমরা চেষ্টা করছি কৃষকদের ক্ষতি যেন কম হয়।

অন্যদিকে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান বলেন, তিস্তার পানি বেড়ে একটি বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। সেটি মেরামত করা হয়েছে। তবে পানি বেড়ে অনেকের ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী মানুষদের নিরাপদ স্থানে নেওয়া ও শুকনো খাবার বিতরণের কাজ চলছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তিস্তা নদীর জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি কালীগঞ্জ নামক স্থানে তিস্তার ডান তীরের প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেটির মেরামতকাজ চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সবকটি (৪৪ টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে। তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে সন্ধ্যায় মাইকিং করা হয়েছে। রাত ৮টার দিকে পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ১২ টার পরে তা ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পার্লামেন্ট প্রতিদিন/ এমআর

Design & Developed by: BD IT HOST