আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য পার্লামেন্টে বিদায়ী ভাষণে ব্যতিক্রমী দৃশ্যের জন্ম দিয়েছেন লেবার পার্টির এমপি কাইল ম্যাকগিন। এক পায়ে জুতা পরে দীর্ঘ ৫৬ মিনিটের বক্তৃতা শেষে অপর পায়ের জুতায় বিয়ার ঢেলে সেটি পান করেন তিনি—অ্যালকোহল গ্রহণের এমন অভিনব এই কৌশল পরিচিত ‘শ্যুয়ি’ নামে। এটি জনপ্রিয় করে তুলেছেন ফর্মুলা ওয়ান তারকা ড্যানিয়েল রিকার্ডো।
বক্তৃতা শেষে ম্যাকগিন বলেন, ‘আমি কীভাবে এ ভাষণ শেষ করব তা নিয়ে অনেক ভেবেছি। শেষে মনে হলো, “শ্যুয়ি” দিয়েই শেষ করাটাই সবচেয়ে ভালো। আমার এলাকার মানুষ এটা উপভোগ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। দুই মেয়াদে চমৎকার সময় কেটেছে। সবাইকে ধন্যবাদ। চিয়ার্স!’ এরপর একটি ক্যান থেকে নিজের জুতায় বিয়ার ঢেলে পান করেন তিনি।
এই দৃশ্যে পার্লামেন্টে হাস্যরসের পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকেই করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান, আবার কেউ কেউ এ ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেন। পরিষদের সভাপতি আলানা ক্লোহেসি সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘সম্মানিত সদস্য, আপনি পরিষদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছেন। আমি ধরে নিচ্ছি আপনার বক্তব্য শেষ।’
নিজের বিদায়ী বক্তৃতায় কাইল নিজেকে বলেন ‘অ্যাক্সিডেন্টাল পলিটিশিয়ান’—অর্থাৎ দুর্ঘটনাবশত রাজনীতিতে আসা একজন মানুষ। এ সময় তিনি সরকারের ওয়েস্টপোর্ট প্রকল্পের সমালোচনা করে বলেন, ‘বন্দরের স্বয়ংক্রিয়করণ একটি প্রহসন ও ঠাট্টা।’
তিনি নিজের মানসিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন। বলেন, এমপি হওয়ার দেড় বছর পর হঠাৎ একদিন মনে হয়েছিল, হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। পরে জানা যায়, সেটি ছিল প্যানিক অ্যাটাক। সেই প্রসঙ্গে ম্যাকগিন বলেন, ‘এখনো মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলামেলা কথা বলা কঠিন। তবে আমি বলতে চাই, সাহায্য চাইতে কখনো লজ্জা পাবেন না—বিশেষ করে পুরুষেরা। সাহস করে বলুন, “আমার সাহায্য দরকার।”’
২০১৭ সালে ম্যাকগিন প্রথমবারের মতো রাজ্য সংসদের উচ্চকক্ষে নির্বাচিত হন। গত মেয়াদে তিনি ছিলেন সংসদীয় সচিব। বিদায় নেয়ার সপ্তাহেও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। গত মঙ্গলবার পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি শেভরনের কর ও নিয়োগ নীতির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, ‘শেভরন শুধু স্বল্পমেয়াদি লাভে আগ্রহী। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করলেও স্থানীয় কর্মীদের জন্য কিছু করছে না।’
এই বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার রজার কুক বলেন, ‘ম্যাকগিনের মন্তব্য তার ব্যক্তিগত মত। আমি তাতে একমত নই। শেভরন আমাদের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং তারা স্থানীয় শ্রমিকদের পাশে আছে।’
পার্লামেন্ট প্রতিদিন/ এমআর