পিপি ডেস্ক: জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় ভারত সীমান্তঘেঁষা গারো পাহাড়ে অবস্থান করা বুনোহাতির পাল লোকালয়ে নেমে তাণ্ডব চালাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে হাতির দল ফসলি জমি ও বসতবাড়িতে হামলা চালানোয় সীমান্তবর্তী অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। ঢাক-ঢোল পিটিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না এই ভয়াবহ তাণ্ডব।
স্থানীয়রা জানান, ৩০-৪০টি বুনোহাতির একটি পাল ভারত থেকে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ে অবস্থান নিয়েছে। সন্ধ্যা হলেই তারা লোকালয়ে নেমে এসে ধান, বেগুন, কলা, লেবু, মাল্টাসহ বিভিন্ন ফসল খেয়ে ও পায়ে দলিত করে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করছে। বুধবার বিকালেও সাতানীপাড়া এলাকায় হাতির দল মাল্টা বাগান, ধানক্ষেত ও সবজি ক্ষেত ধ্বংস করে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ২০ একরের কৃষি খামার ধ্বংস হয়ে গেছে। ধান, লেবু, মাল্টা সবকিছু শেষ করে দিয়েছে হাতির দল। রাতে পাহারা দিয়েও লাভ হচ্ছে না।
আরেক কৃষক আল মামুন বলেন, প্রতিবছরই আমরা এভাবে ক্ষতির মুখে পড়ি। এবছর আগেই হাতি নেমে এসেছে। এখন পাকা ধান কীভাবে রক্ষা করবো, বুঝে উঠতে পারছি না।
ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে শোমনাথপাড়া, বালুরচর, অশেনা কোনা, সাতানীপাড়া, টিলাপাড়া, পাগল গোছা, দিঘলা কোনা, হাতিবারকোনা এমন ১০টি গ্রাম। এই সব এলাকায় মানুষ দিনরাত পাহারা দিচ্ছে, কিন্তু হাতির দল কোনও বাধাই মানছে না।
ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাপ জামাল বলেন, সীমান্ত এলাকার সবচেয়ে বড় সমস্যা এখন বুনোহাতি। বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েও স্থায়ী কোনও সমাধান পাচ্ছি না।
বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠনের নেতা রাহুল রাকসাম জানান, আমরা বারবার মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছি, কিন্তু হাতি তাড়াতে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে ডুমুরতলা বিট কর্মকর্তা রকিবুল হাসান রকিব বলেন, বন বিভাগের পক্ষ থেকে টর্চলাইট, ঢাকঢোলসহ সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা আবেদন করলে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে।
স্থানীয়দের দাবি, হাতি সমস্যা সমাধানে শুধু অস্থায়ী ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি স্থায়ী ও টেকসই উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি, যাতে ফসল রক্ষা ও জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
পার্লামেন্ট প্রতিদিন/ এমআর