দুপুর ১:০৮ । বৃহস্পতিবার । ৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ । ২২শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
  1. অপরাধ
  2. অর্থনীতি
  3. আন্তর্জাতিক
  4. কৃষি বার্তা
  5. খেলাধুলা
  6. খোলা কলাম
  7. চাকরি
  8. জাতীয়
  9. তথ্যপ্রযুক্তি
  10. ধর্ম
  11. পর্যটন
  12. ফিচার
  13. বিনোদন
  14. বিশেষ প্রতিবেদন
  15. মতামত

পদোন্নতি নিয়েও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে ঘুষ বাণিজ্য!

pp
অক্টোবর ১৬, ২০২৪ ৭:১০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

Spread the love

বিশেষ প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে এবার পদোন্নতি নিয়ে ঘুষ বাণিজ্যের সংবাদ চাউর হয়েছে পুরো চট্টগ্রামে। ‘টপ অব দ্যা টাউন’ এ এই সংবাদ এখন ওপেন সিক্রেট। এই বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেকশন অফিসার জাহাঙ্গীর (০১৮১৯-০৪৪৪০৪) প্রকাশিত পদোন্নতি তালিকার বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ পাঠানোর কপির মাধ্যমে। এই উকিল নোটিশের বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড  কৃর্তপক্ষ আমার উকিল নোটিশের কোন আইনগত জবাব দেননি। আইনের তোয়াক্কা না করে সিন্ডিকেটের লোকদেরকে পদোন্নতি দিচ্ছেন। আমি আমার আইনগত অধিকার, বিধি মোতাবেক আমার পদোন্নতি চাই।

সেকশন অফিসার থেকে সহকারী অফিসার পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষেত্রে খসড়া জ্যৈষ্টতা তালিকা ও চুড়ান্ত জ্যৈষ্ঠতা তালিকা প্রণয়ন করতে হয়। কিন্তু জ্যৈষ্ঠতার তালিকা প্রকাশ না করে আগামী ১৭.১০.২৪ইং তারিখ পদোন্নতি কমিটির সভা আহবান করা করেন। প্রতিনিয়ত বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম উপসচিব বেলাল হোসেনের পরামর্শে সকল শাখা প্রধান/সদস্যদের সাথে রূঢ়/ খারাপ আচরণ করতে থাকেন বলে জানা গেছে। তার কথা মতো এবং তার সিন্ডিকেটের পছন্দ মতো লোকদেরকে পদোন্নতির সুপারিশ করতে হবে। এই সিন্ডিকেটের পরিসর তত বড় না হলেও খুবই শক্তিশালী। এই সিন্ডিকেটে স্কুল কলেজেরে কিছু শিক্ষকসহ শিক্ষা বোর্ডের সাত কর্মকর্তা জড়িত বলে অভিযোগ আছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখি হলেও তারা কিন্তু ঠিকই বহাল তবিয়তে আছে।

বদলির পর এই সিন্ডিকেটের আর একটি প্রজেক্ট হলো পদোন্নতি। এই পদোন্নতি কমিটির সদস্যরা হলেন- প্রফেসর রেজাউল করিম, চেয়ারম্যান, (০১৭১১৭২৩২২৪), প্রফেসর আমিরুল মোস্তফা, সচিব,(০১৮১৯-৬২৭৯৪২); প্রফেসর এ এম এম মুজিবুর রহমান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (০১৮১৯৮২১১৫৬); প্রফেসর মো. জাহেদুল হক, কলেজ পরিদর্শক (০১৭১৬২৭৮৩২৭) ড. বিপ্লব গাঙ্গুলি, বিদ্যালয় পরিদর্শক (০১৮১৯৩৯৯৩৯৩); প্রফেসর মোহাম্মদ এমদাদ হোসাইন, উপ-পরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা), (০১৮১৯৬১৪৮৭৫), মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, উপ সচিব। এই বিষয়ে তাদের সাথে মোবাইলে যোগযোগ করা হলে তারা কথা বলতে রাজি হয়নি।

জানা যায় যে, ২০০৯ সালের শেষের দিকে আওয়ামী লীগ সরকার চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে রাতের আঁধারে ২০জন ছাত্রলীগ/ যুবলীগের ক্যাডারদের নিয়োগ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আছে। তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রফেসর আবু জাফর প্রত্যেকের কাছ থেকে ২ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। এই ঘুষ গ্রহণের বিষয় তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্তে নামে। উক্ত তদন্তে আবু জাফরকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শাস্তি প্রদান করেন এবং তিনি সেই শাস্তি ভোগও করেন।

২০১৪ সালের আদালতের রায়কে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় লোকদের চাকুরী স্থায়ী করে তৎকালীন কমিটি। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে শিক্ষামন্ত্রী নওফেলের পদায়নকৃত চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সকল কর্মকর্তাগণ এমনকি নওফেলের বদলি বাণিজ্যের ক্যাশিয়ার বলে খ্যাত উপ-সচিব বেলালসহ নওফেল পরিবারের পরোক্ষ সহযোগীদের ১৫-২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে পদোন্নতি দেওয়ার কথা শিক্ষা বোর্ড থেকে শুরু করে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সকলের জানা।

চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম, উপ-পরিচালক এমদাদ হোসেন, উপ-সচিব বেলাল হোসেন। এই তিন কর্মকর্তা অফিসে সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিভিন্ন ধরণের হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে পদোন্নতি প্রদানের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়। দুইজন শাস্তিপ্রাপ্ত কর্মচারী (চেয়ারম্যানের ড্রাইভারকে শারীরিক নির্যাতনের নির্যাতনের জন্য শাস্তি প্রাপ্ত)। দুই জনই আপন ভাই-বোন। একজন জাহিদ হোসেন ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে মেধা কেলেঙ্কারীর নায়ক ও তার বোন মোমেনা আক্তার। উচ্চমান সহকারী পদে ৪ লক্ষ টাকার চুক্তিতে পদোন্নতি দিতে চুক্তিবদ্ধ হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তাদের শাস্তি চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সর্বোচ্চ কমিটি বোর্ড কমিটিতে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। কিন্ত এই শাস্তির দায় দণ্ড মওকুফ না করে তাদের পদোন্নতি দিতে উঠে পড়ে লেগেছে বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম ও শিক্ষা বোর্ড সিন্ডিকেট।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রফেসর রেজাউল করিম অসদআচারণের কারণে তার পদোন্নতি তার সহকর্মীদের তিন বছর পরে পদোন্নতি হয়। পটিয়া সরকারী কলেজে কর্মরত অবস্থায় কলেজের পিয়ন রহিম উদ্দিন দিন দুপুরে পরীক্ষার দায়িত্বরত অবস্থায় শিক্ষাবোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিমকে থাপ্পর মেরেছিল। পরে অধ্যক্ষ আবদুল মালেকের কাছে অভিযোগ দাখিল করেন। তখন উপাধ্যক্ষ সজল পালকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু প্রফেসর রেজাউল করিমের পক্ষে কেউ সাক্ষী না দেওয়াতে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেননি তিনি।

বোয়ালখালী স্যার আশোতোষ সরকারী কলেজে কর্মরত অবস্থায় তার সহকর্মী হরিশংকর দাশকে গলাচেপে ধরে তুলে ফেলেন। তুলে আচাড় মারার অভিযোগ আছে। অসদআচারণ ও বিধিবর্হিভূত কাজ করার জন্য কানুনগো পাড়া সরকারী কলেজে শাস্তি প্রাপ্ত হন। সবশেষ চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সচিব থাকাকালীন মার্স্টাস সিমেন্স কোম্পানীর বিল পরিশোধের সময় নগদ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করেন। সেই সংবাদও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। এই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাকে বদলি করেন।

উপ-সচিব বেলাল হোসেন ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেলে ক্যাশিয়ারখ্যাত ড. বিপ্লব গাঙ্গুলীর মাধ্যমে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী নওফেল ও তার পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ লেনদেনের অভিযোগও আছে। তিনি নাকি তাদের মাধ্যমে ৭ মাসের জন্য চেয়ারম্যান হিসাবে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের ইতিহাসে দুই বছরের কমে কাউকে কোন সময়ে চেয়ারম্যান পদে পদায়ন করা হয় নাই।

বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী ও উপসচিব বেলাল হোসেনের নামে বর্তমানে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা আছে বলে জানা গেছে। বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা নং-৬২৭/২৪ এবং ড. বিপ্লব গাঙ্গুলীর মামলা নং-৬৪০/২৪ (কোতোয়ালী থানা)। তারা বিভিন্ন মহলে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে এই মামলা ঠেকিয়ে রেখেছে এবং নাম বাদ দেওয়ার তদবির করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

যে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীকে ঘুষ দেলদেনের মাধ্যমে পদোন্নতি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তারা হলো- মো. জাহিদ হোসেন, উচ্চমান সহকারী, মোমেনা আক্তার, উচ্চমান সহকারী, জাহিদ হোসেন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রা:, ওমর ফারুক চৌধুরী, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রা:, শওকত ইকবাল, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রা:, কাজী মুহা.রুম্মান উদ্দীন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রা:, মুহা. শফি, সনদ লেখক, ফোরকান, বার্তা বাহক, মো, ইয়াছিন, পিয়ন, দিদার পিয়ন, নুরুল ইসলাম, পিয়ন, আক্তার হোসেন, পিয়ন।

সঠিকভাবে তদন্ত করলে তাদের নিয়োগের আসল চিত্র বের হবে বলে শিক্ষাবোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান।

EBP

অনুসন্ধানে জানা যায়, কিছু আগে সচিব বিদায়ের আধা ঘন্টার মধ্যে সৎ কর্মচারীদের সরিয়ে দিয়ে সকল দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদেরকে উপ-সচিব বেলাল হোসেন স্বাক্ষরিত আদেশে নানা গুরুত্বপূর্ন টেবিলে বদলি করা হয়েছে। দুর্নীতির শিকড় আরো গভীরে চলে যায়। চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সচিব প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র নাথ বিগত ১৪.৭.২৪ইং তারিখে বিদায় দেন বিকাল চার ঘটিকায়। বিকাল সাড়ে চার ঘটিকার সময় উপ-সচিব বেলাল হোসেন স্বাক্ষরিত চারজন কর্মচারীকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে উপ-সচিব বেলাল নাকি লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ আছে। এই সংবাদটি শিক্ষাবোর্ডে এখন ওপেন সিক্রেট। পরের দিন ১৫.৭.২৪ইং তারিখ বারটার সময় সচিব পদে প্রফেসর আমিরুল মোস্তফা যোগদান করেন।

বদলির আদেশ প্রাপ্তদের মধ্যে চার জন শাস্তিপ্রাপ্ত। আরো কয়েকজন সাধারণ জনগণের অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্বের চেয়ারম্যানগণ বিভিন্ন দপ্তরে বদলি করেন। কিন্তু বর্তমান চেয়ারম্যান যোগদানের পর আবারও মাথাছড়া দিয়ে উঠে দুর্নীতিবাজ বেলাল সিন্ডিকেট। জনগুরুত্বপূর্ণ দপ্তর/টেবিল থেকে সৎকর্মচারীদের সরিয়ে শাস্তিপ্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের বসিয়ে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে সাধারণ জনগণ প্রতিনিয়ত বিনিময় ছাড়া সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং হবে।

উক্ত বদলির আদেশ নিয়ে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। কিন্তু সিন্ডিকেটের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছে না। এখন বোর্ডের কর্মচারী থেকে সাধারণ জনগণের মাঝে একটি প্রশ্নই বিরাজ করছে নতুন সচিব যোগদানের আগেই উপ-সচিব বেলাল হোসেন এত তড়িগড়ি করেই শাস্তিপ্রাপ্তদের বদলি করে সৎকর্মচারীদের বেকায়দায় ফেলবে?

উপ-সচিব বেলাল হোসেন কর্তৃক বদলি হওয়া দুর্নীতি ও শাস্তিপ্রাপ্ত কর্মচারীরা হলেন- বিমল চাকমা, সেকশন অফিসার, হিসাব শাখা থেকে সংস্থাপন শাখা। তিনি স্টোর কিপার থাকায় অবস্থায় তদন্তে অভিযুক্ত।  মো, জাহাঙ্গীর সেকশন অফিসার, হিসাব শাখা থেকে কলেজ শাখা। তিনি হাইকোর্টের রীট জালিয়াতির তদন্তে শাস্তিপ্রাপ্ত। জাহেদ হোসেন, গ্রহণ ও প্রেরণ শাখা থেকে পরীক্ষা শাখা। তিনি বিদ্যালয় শাখায় তদন্তে শাস্তিপ্রাপ্ত। তাঁর বেতন বৃদ্ধি ফাইল স্থগিত আছে। মো. ইয়াছিন, অফিস সহায়ক; কলেজ শাখা থেকে চেয়ারম্যান দপ্তর। পরীক্ষা শাখায় তদন্তে শাস্তিপ্রাপ্ত। তাঁর বেতন বৃদ্ধির ফাইল স্থগিত আছে। এ ছাড়াও চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের আওতায় তিনটি আবাসিক ভবন। এই তিনটি আবাসিক ভবনে কর্মকর্তা/কর্মচারীর ৩০টি পরিবার থাকেন। এই সকল ভবনের রক্ষাণাবেক্ষণ কমিটিতে শিক্ষাবোর্ডের উপ-সচিব বেলাল হোসেন স্বাক্ষরিত ৪.৭.২৪ইং তারিখের চিটিতে চারজন কর্মচারীর মধ্যে তিনজন শাস্তিপ্রাপ্ত।

এই শাস্তিপ্রাপ্ত কর্মচারীরা হলেন- ওসমান গণি, সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা। তিনি হাইকোর্টের রীট জালিয়াতির অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত। মো. জাহাঙ্গীর, সেকশন অফিসার। তিনিও হাইকোর্টের রীট জালিয়াতির অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত। জাহিদ হোসেন, উচ্চমান সহকারী। চেয়ারম্যানের ড্রাইভারকে মারার অপরাধে  শাস্তি পেয়ে প্রমোশন বঞ্চিত হয়েছেন।

এই সকল দুর্নীতিবাজ কর্মমর্তা-কর্মচারীদের দিয়ে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের সকল ধরণের কর্মকা- নিয়ন্ত্রণ করে আসছে এই সিন্ডিকেট। নতুন সচিব প্রফেসর আমিরুল মোস্তফা ও নতুন চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম যোগদানের পর এই সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দৌরত্ব বেড়ে গেছে দ্বিগুণ হারে।

এদেরকে যদি এখনই রুখতে না পারে তাহলে এর মাশুল গুনতে হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অর্ন্তবতীকালীন সরকারকে।

চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার আগে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব ছিলেন। সচিব থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর অনিয়মের টাকা শিক্ষাবোর্ডে ফেরৎ দিয়েছিল বলে কথিত আছে। শাস্তির বদলে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর কৃপায় একজন দুর্নীতিবাজ সচিব চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হয়ে গেলেন।

বর্তমান সচিব প্রফেসর আমিরুল মোস্তফাও নাকি সাবেকমন্ত্রী নওেফেলের বিশেষ কৃপায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সচিব হয়ে আসছেন। তবে তিনি বেশীদিন হয়নি শিক্ষা বোর্ডে।

দুই বছরের জন্য আসেন শিক্ষা বোডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলি। এখন প্রায় একযুগ হয়ে গেছে শিক্ষা বোর্ডে। জনশ্রুতি আছে একটা স্কুল ভিজিট করলে তাকে নাকি কমপক্ষে চল্লিশ হাজার টাকা দিতে হয়। বিশেষ করে জুনিয়র স্কুলের শিক্ষার্থীরা যখন অন্যকোন স্কুলে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ফরম ফিলাপ করতে যায় তখন বিদ্যালয় পরিদর্শক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, উপ-সচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের ব্যবসা জমজমাট হয়। ততকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথের বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ পত্র-পত্রিকায় অনেক অভিযোগ ও সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি তৎকালীন কর্তৃপক্ষ। শাস্তির বদলে তাকে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হয়েছিল।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নওফেল সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা উপ-সচিব মোহাম্মদ বেলাল হোসেন। সকল কেনা-কাটা হতে শুরু করে সকল দুর্নীতির চাবিকাঠি নাকি তার হাতে বলে শিক্ষাবোর্ডে প্রবাদ প্রচার আছে। বিভিন্ন সংশোধনীর সময় নানা বাহনা করে নানা ধরণের তথ্য চেয়ে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি করে থাকে বলে অভিযোগ আছে। বিভিন্ন দপ্তরে তার সিন্ডিকেটের লোক আছে তাদের মাধ্যমে কোন ফাইল তার টেবিলে গেলে সেই কাজ তাড়াতাড়ি হয়ে যায়। তা না হলে সেবাপ্রার্থীরা সরকারী ফি দিয়ে আবেদন করার পরও দিনের পর দিন ঘুরেও সেবা পায় না এবং তাদের সেবা পেতে বিলম্ব হয়।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কিছু কিছু কর্মকর্তা কর্মচারী বোল পাল্টিয়ে রাতারাতি জামাত কিংবা বিএনপি’র লোক বলেই প্রচার করতে শোনা যায়। তাদের দুর্নীতিকে আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এরা একধরণের বর্নচোরা বলে শিক্ষা বোর্ডের সৎকর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছ থেকে জানা যায়।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য রাজনৈতিক সুপারিশের পাশাপাশি যথারীতি বিভিন্ন শাখার পরিদর্শক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, উপ-সচিব, সচিব ও চেয়ারম্যানকে ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিছু দিনের জন্য শিক্ষাবোর্ডে এসে এই সকল কর্মকর্তা অনিয়ম আর দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে। এই সকল বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে সাধারণ নাগরিকেরা মনে করেন।

পিপি/ আরটি

Design & Developed by: BD IT HOST